বেশী ভাল না! সর্দি, জ্বর...একটা প্যারাসিটামল, নাপা...খেয়ে নিলেই হয়। অসুখ সারবে না আবার!
দেখা গেল এসব খেয়ে ঠিকই অসুখ ভাল হয়ে গেল! আর আমাকে বিজ্ঞের চেয়ারে বসালেন। কখনো কী একটু ভেবে দেখেছেন অসুখটি ব্যাকটেরিয়াঘটিত নাকি ভাইরাসঘটিত। আমরা অনেকেইতো অ্যান্টিভাইরালের কথাও শুনিনি... এটা কী জিনিস ভাই! অসুখের নাম শুনলেই হল সর্দি, জ্বর, কাশি, মাথাব্যাথা, পেটব্যাথা থেকে পা-ব্যাথার কথা শুনলেই বিজ্ঞের মতো পরামর্শ দেই: অ্যান্টিবায়োটিক খা! তাহলে আজ থেকে শুনে রাখুন আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ চীনে প্রতিবছর ৮০,০০০ মানুষ মারা যায় নিয়ম না মেনেই অপ্রয়োজনীয় ও ভুল পদ্ধতিতে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করে
।(সূত্রঃ Natural News) আমাদের দেশেও মরে, কিন্তু কই জানলাম নাতো! জানব কী করে... আমি ভাই আদার ব্যাপারী, জাহাজের খবর নেয়ার টাইম কই?
।(সূত্রঃ Natural News) আমাদের দেশেও মরে, কিন্তু কই জানলাম নাতো! জানব কী করে... আমি ভাই আদার ব্যাপারী, জাহাজের খবর নেয়ার টাইম কই?
এখনকার সবচেয়ে বেশী আলোচিত বিষয় হল অ্যান্টিবায়োটিক এর অপব্যবহার। এ বছরের স্বাস্থ্য দিবসের WHO (World Health Organization) এর স্লোগানটাই এরকম -
“Antimicrobial resistance: No action today, No cure tomorrow”
আমদের প্রতিবেশী দেশ ভারত সম্পর্কে একটা কথা শুনেছিলাম; কথাটি এরকম-‘যে দেশে মুদি দোকানে ঔষুধ বিক্রি হয় সেই দেশে ডাক্তারের কী দরকার!’ আমার মধ্যেও ভাবনার উদয় হল, আমরাও বা কম কীসে! সর্দি জ্বর হলে কী কী ঔষুধ খেতে হবে তা আমাদের পাড়ার ঐ পুচকে ছেলেটাও জানে! অত্যুৎসাহী ডাক্তারও অনেক সময় বিনা প্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করেন; ...আর আমাদের শিক্ষিত সমাজের কথা নাইবা বললাম!
মানুষ হাসপাতালে যায় রোগ সারাতে কিন্তু আমাদের দেশের হাসপাতালগুলোর অবস্থা আমার চেয়ে আপনারাই বেশী জানেন; সেটা রোগ দমনে নয় যেন রোগ বিস্তারে বেশী ভূমিকা রাখছে! বর্জ্য¨ রিসাইক্লিং না করে ফেলে দিলে দেহের অব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের সংস্পর্শে তৈরী হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী মাল্টিড্র্যাগ রেজিস্ট্যান্স জীবাণু। খুব অবাক করার মতো বিষয় হল ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালের মতো স্থানেও উপযুক্ত রিসাইক্লিং সিস্টেম নেই!!!
মাল্টিড্র্যাগ রেজিস্ট্যান্স:
সহজ কথায় মাল্টিড্র্যাগ রেজিস্ট্যান্স হল অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে ব্যাকটেরিয়ার বিশেষ ক্ষমতা। আশ্চর্যের কথা হল কোন ব্যাকটেরিয়া এই ক্ষমতা লাভ করলে পলাজমিড বিনিময়ের মাধ্যমে তা অণ্য ব্যাকটেরিয়াও ছড়ায় অর্থাৎ ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার প্লাজমিডগুলো যদি কোনভাবে নিরীহ অণুজীবের মধ্যে ঢুকে পড়ে তাহলেই সেগুলো অ্যান্টিবায়োটিক/অ্যান্টিভাইরাল রেজিস্ট্যান্স হয়ে যায় এবং জিনগত পরিবর্তনের মাধ্যমে তা উচ্চমাত্রায় বেড়ে যায়। এভাবে আরো ভিন্ন ধরণের প্লাজমিড ঢুকে গেলেই তৈরি হয় মাল্টিড্র্যাগ রেজিস্ট্যান্স বা সুপারবাগ।
কোথায় পাব:
কোথায় পাব না সেটাই বলুন! হাসপাতাল, মুরগির খামার, গবাদিপশু, মৎস্য খামার, ওষুধশিল্প এবং নদীনালাগুলোই মাল্টিড্র্যাগ এর উৎস। তাছাড়া মানুষের মলমূত্রেও এই মাল্টিড্র্যাগ রেজিস্ট্যন্স অণুজীবগুলো পাওয়া যায়, কারণ আমরা যেসব অ্যান্টিবায়োটিকগুলো ব্যবহার করি তার সবটুকু ব্যবহৃত হয় না।
কতটা শক্তিশালী :
লড়াই করবেন... দেখা যাক আপনার কী আছে যা নিয়ে আপনি লড়াইয়ে নামবেন। কোন পরিবেশ কোন অণুজীবগুলো কী কী ধরণের প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করেছে বিয়য়ে পূর্ণাঙ্গ কোন উপাত্ত বাংলাদেশে নেই! গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গবেষণালব্ধ ফলাফল- ‘দেশীয় পরিবেশ থেকে সংগৃহীত অণুজীবগুলোতে সিপ্রোফ্লোক্সাসিন, পেনিসিলিন, অ্যাম্পিসিলিন, ব্যাসিট্রাসিন, স্ট্রেপটোমাইসিন, সেফালোক্সিন, সালফামিথাক্সল, নোভোবায়োসিন ইত্যাদি বহুল ব্যবহৃত শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে ৪০%-১০০% পর্যন্ত প্রতিরোধ ক্ষমতা পাওয়া গেছে। যান, এখন লড়াইয়ে নেমে পড়ুন।
তথ্যসূত্রঃ
1. Science Daily
2. Natural News
3. কালের কন্ঠ(সন্ধানী)- ১৪ ডিসেম্বর, ২০১০
2. Natural News
3. কালের কন্ঠ(সন্ধানী)- ১৪ ডিসেম্বর, ২০১০
No comments:
Post a Comment